লক্ষ্মীপুরের রায়পুর উপজেলার দক্ষিণ চরবংশী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আবু জাফর মো. সালেহর বিরুদ্ধে সরকারি অ্যাম্বুলেন্স ‘স্বপ্নযাত্রা’কে রাজনৈতিক কাজে ব্যবহারের অভিযোগ উঠেছে। তিনি ইউনিয়নের সব মেম্বারকে অ্যাম্বুলেন্সে নিয়ে লক্ষ্মীপুর-২ আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য ও দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত নুরউদ্দিন চৌধুরী নয়নের বাসায় যান। এ সময় সাবেক চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সভাপতি আবদুর রশীদ মোল্লাও ছিলেন। এ নিয়ে বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে।
জেলা প্রশাসন বলছে, অ্যাম্বুলেন্সটি শুধুমাত্র রোগীদের ব্যবহারের জন্য। কোনও রাজনৈতিক বা অন্যকোনও কাজে ব্যবহার করা যাবে না। কিন্তু সরকারি নীতিমালা অমান্য করে ব্যক্তিগত এবং রাজনৈতিক কাজে চেয়ারম্যান অ্যাম্বুলেন্সটি ব্যবহার করেছেন।
চেয়ারম্যান আবু জাফর মো. সালেহ দাবি করেন, স্বপ্নযাত্রা অ্যাম্বুলেন্স খুব কম মানুষ ভাড়ায় নেন। এমনিতেই পড়ে থাকে। কিন্তু চালককে তো বেতন দিতে হয়। এ জন্যই ভাড়ায় ব্যবহার করেছেন।
জানা গেছে, রবিবার (৩ ডিসেম্বর) সন্ধ্যার পর রায়পুর উপজেলার দক্ষিণ চরবংশী ইউনিয়ন পরিষদ সংলগ্ন মোল্লার হাট বাজার থেকে ইউপি চেয়ারম্যান তার পরিষদের সব মেম্বার ও সাবেক চেয়ারম্যানকে সঙ্গে নিয়ে লক্ষ্মীপুর মহিলা কলেজের সামনে এমপি নয়নের বাসায় গিয়ে নির্বাচনি সভায় অংশ নেন। সেখানে এমপি নয়নের সঙ্গে সভা ছিল। সন্ধ্যা ৭টার সময় এমপির বাসার সামনে অ্যাম্বুলেন্সটি চেয়ারম্যান-মেম্বারদের নামিয়ে ওই বাড়ির সামনেই অবস্থান করছিল। এ সময় দুই সাংবাদিক অ্যাম্বুলেন্সটির ছবি তুললে সটকে পড়েন চালক।
এদিকে, বিষয়টি জানতে পেরে জেলা প্রশাসক সুরাইয়া জাহান ও রায়পুরের ইউএনও অঞ্জন দাশ ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তারা জানান, রোগীদের সেবা দেওয়া ছাড়া কোনোভাবেই অন্য কাজে অ্যাম্বুলেন্সটি ব্যবহার করা যাবে না।
ইউপি চেয়ারম্যান বলেন, আমি ইউএনও এবং সহকারী কমিশনারের (ভূমি) অনুমতি না নিয়ে অ্যাম্বুলেন্সটি ব্যবহার করে ভুল করেছি। অ্যাম্বুলেন্স কেউ ভাড়ায় নেন না। চালককে ভাড়া দিতে হয়। এজন্যই ভাড়ায় আমি ব্যবহার করেছিলাম। অন্যকোনও গাড়ি নিলেও আমাকে ভাড়া দিতে হতো।
রায়পুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) অঞ্জন দাশ বলেন, রবিবার রাতে সাংবাদিকদের মাধ্যমে ঘটনাটি জানতে পারি। রাতেই অ্যাম্বুলেন্সটি উপজেলায় নিয়ে আসা হয় এবং সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মনিরা খাতুন নির্বাচনি আচরণবিধির ওপর মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হয়। সরকারি যানবাহন (স্বপ্নযাত্রা অ্যাম্বুলেন্স) ব্যবহার করে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থীর পক্ষে প্রচারণার অপরাধে চেয়ারম্যানকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।